প্রকাশিত: Sun, Jun 2, 2024 11:05 AM
আপডেট: Thu, Jul 10, 2025 11:05 PM

[১]ফ্লাইট বাড়িয়েও শেষরক্ষা হয়নি, শ্রমিক ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে পারেননি প্রায় ৩০ হাজার কর্মী

মুসবা তিন্নি: [২] শুক্রবার রাতে রওয়ানা হতে না পারায় কাজে যোগ দেওয়ার আর সুযোগ নেই তাদের, মালয়েশিয়া সময় বেঁধে দিয়েছিলো ৩১ মে। ভিসা ও ছাড়পত্র পেয়েও উড়োজাহাজের টিকিটসংকটে স্বপ্নভঙ্গ হলো এই বিপুলসংখ্যক কর্মীর। সময় বেঁধে দেওয়ার খবরটি জানাজানি হয় ২০ মে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলো উড়োজাহাজে আসনসংখ্যা বাড়িয়ে দেয় এবং বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা ছিলো অপ্রতুল। শেষ দিন শুক্রবার যেতে পেরেছেন দেড় হাজার কর্মী। 

[৩] জনশক্তি রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি ও উদাসীনতা এ জন্য দায়ী। তারা বলছেন, মালয়েশিয়া গত মার্চেই বিদেশি কর্মী প্রবেশের জন্য ৩১ মে সময়সীমা বেঁধে দেয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় এ নিয়ে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দেয় ১৬ মে। ফলে শেষ মুহূর্তে উড়োজাহাজের টিকিটের তীব্র সংকট তৈরি হয়।

[৪] সময়সীমার শেষ দিনে শুক্রবার মালয়েশিয়া যাওয়ার শেষ চেষ্টা করতে টিকিট ছাড়াই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিড় জমান হাজারো মানুষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে না পেরে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরেও ছিল বাংলাদেশি কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। শেষ দিনে দেশটিতে ঢুকতে পারার আনন্দ থাকলেও ইমিগ্রেশন পার হতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

[৫] বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রবেশের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি আরও আগে জানলে আগেভাগেই ব্যবস্থা নিতে পারত। বর্তমানে বিমানের হজ ফ্লাইট চলছে। তারপরও প্রবাসীদের কুয়ালালামপুর নেওয়ার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হয়েছে। 

[৬] বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী আছেন। গত বছর সেখানে গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন কর্মী। এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গেছেন ৪৪ হাজার ৭২৭ জন। চার বছর পর ২০২২ সালে দেশটির শ্রমবাজার খুলেছিল। 

[৭] হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়ালালামপুর নিয়মিত ৯টি ফ্লাইট যায়। পাশাপাশি সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ঢাকা-কুয়ালালামপুর পথে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ। সব ফ্লাইট মিলিয়ে গতকাল দেড় হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পেরেছেন। 

[৮] শুক্রবার সকাল থেকে রিক্রুটিং এজেন্সির আশ্বাসে উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই বিমানবন্দরে ছিলেন হাজারো মালয়েশিয়াগামী। তাদের কেউ কেউ দুই-তিন দিন ধরে বিমানবন্দরে অবস্থান করছিলেন।

[৯] বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সন্ধ্যায় বিশেষ ফ্লাইটের জন্য জনপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করে ৭৩ হাজার ৬১৬ টাকা।

[১০] চাহিদা বাড়ায় গত এক মাস ধরে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে উড়োজাহাজে আসন সক্ষমতাও বাড়িয়েছে দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো। নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বিমান বাংলাদেশ ও এয়ার এশিয়া। বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসও এ রুটে বড় উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসন সক্ষমতা দ্বিগুণ করেছে। টিকিটের চাহিদা বাড়ায় কম্বোডিয়ার সরকারি এয়ারলাইনস কম্বোডিয়া অ্যাংকর এয়ারকে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ায় চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব